ক্যাস্টর অয়েল এর উপকারিতা,ক্যাস্টর অয়েল এর দাম কত


 ক্যাস্টর অয়েল বা রেড়ির তেল বহু বছর ধরে তার ঔষধি এবং বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য পরিচিত। এর প্রধান উপাদান হলো রিসিনোলিক অ্যাসিড, যা এর অনেক উপকারিতার জন্য দায়ী। নিচে ক্যাস্টর অয়েলের কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা তুলে ধরা হলো:

স্বাস্থ্য উপকারিতা:

  • কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়: ক্যাস্টর অয়েল একটি শক্তিশালী ল্যাক্সেটিভ বা জোলাপ হিসেবে কাজ করে। এটি অন্ত্রের পেশী সংকোচনকে উদ্দীপিত করে মল নির্গমনে সাহায্য করে। সাধারণত ৫-১৫ মিলি ক্যাস্টর অয়েল খালি পেটে খেলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপকার পাওয়া যায়। তবে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • প্রসব বেদনা শুরু করতে সাহায্য করে (চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে): কিছু সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয় যে ক্যাস্টর অয়েল গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব বেদনা শুরু করতে সাহায্য করতে পারে। তবে এটি অবশ্যই ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে এবং পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত, কারণ এর অতিরিক্ত ব্যবহার মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমায়: রিসিনোলিক অ্যাসিডে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা জয়েন্টের ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। গরম ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করলে বা ক্যাস্টর অয়েলের প্যাক ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যাস্টর অয়েল লিম্ফোসাইটের উৎপাদন বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • ফুসকুড়ি ও ত্বকের জ্বালা কমায়: এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বকের ফুসকুড়ি, পোকামাকড়ের কামড় এবং অন্যান্য ত্বকের জ্বালা কমাতে সহায়ক।

চুলের উপকারিতা:

  • চুলের বৃদ্ধি উন্নত করে: ক্যাস্টর অয়েল মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, যা চুলের ফলিকলকে উদ্দীপিত করে এবং চুলের বৃদ্ধিকে উন্নত করে।
  • চুল ঘন করে: নিয়মিত ব্যবহারে এটি চুলকে ঘন ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • চুলের আগা ফাটা কমায়: ক্যাস্টর অয়েল চুলের আগায় লাগালে তা মসৃণ হয় এবং আগা ফাটা কমাতে সাহায্য করে।
  • মাথার ত্বকের সংক্রমণ কমায়: এর অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের খুশকি এবং অন্যান্য সংক্রমণ কমাতে সহায়ক।
  • চুলে মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা আনে: এটি চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

ত্বকের উপকারিতা:

  • প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার: ক্যাস্টর অয়েলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
  • ব্রণ কমাতে সাহায্য করে: এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং প্রদাহ কমায়।
  • দাগ কমাতে সহায়ক: নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগ, বিশেষ করে ব্রণের দাগ হালকা করতে পারে।
  • বলিরেখা কমায়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
  • ফাটা গোড়ালি নিরাময় করে: ক্যাস্টর অয়েল ফাটা গোড়ালিতে লাগালে তা নরম হয় এবং দ্রুত নিরাময় লাভ করে।

ব্যবহারের নিয়ম:

  • কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য: ৫-১৫ মিলি খালি পেটে খান।
  • ব্যথার জন্য: হালকা গরম করে আক্রান্ত স্থানে মালিশ করুন অথবা ক্যাস্টর অয়েলের প্যাক ব্যবহার করুন।
  • চুলের জন্য: সামান্য গরম করে মাথার ত্বকে ও চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন এবং ৩০ মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
  • ত্বকের জন্য: অল্প পরিমাণে নিয়ে ত্বকে লাগান এবং আলতোভাবে মালিশ করুন।

সতর্কতা:

  • গর্ভবতী মহিলাদের অভ্যন্তরীণভাবে ক্যাস্টর অয়েল গ্রহণ করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • সরাসরি ত্বকে লাগানোর আগে ছোট অংশে পরীক্ষা করে দেখুন কোনো অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা আছে কিনা।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাস্টর অয়েল গ্রহণ করলে বমি, ডায়রিয়া এবং পেটে ব্যথার মতো সমস্যা হতে পারে।

ক্যাস্টর অয়েল একটি বহুমুখী তেল যা সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন