হাতিশুর গাছ বিভিন্ন ভেষজ গুণাবলীর জন্য পরিচিত এবং ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসায় এর ব্যবহার রয়েছে। এর পাতা ও মূলের রস বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় বলে দাবি করা হয়। যেমন:
উপকারী দিক (ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার অনুযায়ী):
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এর মূল এবং পাতার রস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি: আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এর পাতার রস শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করতে এবং শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে হাঁপানি রোগীদের জন্য।
- হজমের উন্নতি: মূল ও পাতার রস হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের ফোলাভাব কমাতে কার্যকর।
- কিডনি ও লিভারের কার্যকারিতা: নিয়মিত এর মূলের রস সেবনে কিডনি ও লিভারের কার্যকারিতা উন্নত হয় বলে দাবি করা হয়।
- প্রদাহ ও ব্যথা উপশম: এটি প্রদাহনাশক, ব্যথানাশক এবং অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে পরিচিত। বাতের ব্যথা কমাতে এর পাতার রস সরিষার তেলের সাথে ব্যবহার করা হয়।
- ক্ষত ও ত্বকের সমস্যা: এর পাতার রস ক্ষত, ফোঁড়া, চোখের কনজাংটিভাইটিস এবং ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণের জন্য ব্যবহার করা হয়।
- বিষাক্ত পোকার কামড়: বিষাক্ত পোকার কামড়ে (যেমন সাপ, মাকড়সা, মৌমাছি) ফোলা ও জ্বালাপোড়া কমাতে এর পাতা বেটে রস লাগানো হয়।
- জ্বর ও কাশি: জ্বর ও কাশিতে এর মূল জলের সঙ্গে ফুটিয়ে ক্বাথ তৈরি করে ব্যবহার করা হয়।
তবে, হাতিশুর গাছ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:
- বিষাক্ততা: হাতিশুর গাছে পাইরোলিজিডিন অ্যালকালয়েড (pyrrolizidine alkaloids) নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে। এই বিষ অতিরিক্ত মাত্রায় বা দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে লিভারের ক্ষতি করতে পারে এবং এমনকি মানবদেহে টিউমার সৃষ্টি করতে পারে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ আবশ্যক: উপরে উল্লেখিত উপকারী দিকগুলো ঐতিহ্যবাহী ব্যবহারের ভিত্তিতে বলা হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। তাই, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হাতিশুর গাছ বা এর কোনো অংশ সেবন করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সংক্ষেপে, হাতিশুর গাছের ভেষজ গুণাবলী থাকলেও, এর বিষাক্ততার ঝুঁকি থাকায় কোনো রকম ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া এটি সেবন করা উচিত নয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন