পায়ের রগে টান লাগলে তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ নিলে আরাম পাওয়া যায়। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো:
টান লাগা পেশি প্রসারিত করুন:
- যদি হাঁটুর পেছনের দিকে টান লাগে, তাহলে পা সোজা করে পায়ের আঙুলগুলো হাত দিয়ে ধরে নিজের দিকে টানুন।
- যদি পায়ের পাতার নিচে টান লাগে, তাহলে পায়ের আঙুলগুলো ধরে উপরের দিকে টানুন।
- দেয়ালের দিকে মুখ করে সামান্য দূরে দাঁড়ান এবং হাত দিয়ে দেওয়াল ধরে এক পা পিছনে টানটান করে রাখুন। এতে কাফ মাসলে (পেছনের পেশি) প্রসারিত হবে।
মালিশ করুন:
- যে জায়গায় টান লেগেছে সেখানে হালকা হাতে মালিশ করুন। এতে রক্ত চলাচল বাড়বে এবং পেশি শিথিল হবে।
- প্রথমে হালকাভাবে এবং পরে ধীরে ধীরে চাপ দিয়ে মালিশ করতে পারেন।
গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিন:
- প্রথমে ঠান্ডা সেঁক (বরফের প্যাক বা ঠান্ডা তোয়ালে) ৫-১০ মিনিটের জন্য দিন। এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
- এরপর গরম সেঁক (গরম পানির ব্যাগ বা গরম তোয়ালে) ৫-১০ মিনিটের জন্য দিন। এটি রক্ত চলাচল বাড়াতে এবং পেশি শিথিল করতে সাহায্য করবে।
- ঠান্ডা ও গরম সেঁক কয়েকবার পরিবর্তন করে দিতে পারেন।
পর্যাপ্ত জল পান করুন:
- পানিশূন্যতার কারণেও পায়ের রগে টান লাগতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা জরুরি।
- ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় (যেমন - ওরাল স্যালাইন) পান করতে পারেন।
ব্যথানাশক ওষুধ:
- যদি ব্যথা খুব বেশি হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে পারেন।
বিশ্রাম নিন:
- টান লাগার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। পেশির উপর বেশি চাপ দেবেন না।
প্রতিরোধের জন্য কিছু বিষয় মনে রাখুন:
- নিয়মিত পায়ের ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং করুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।
- সুষম খাবার গ্রহণ করুন এবং শরীরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের অভাব পূরণ করুন।
- আরামদায়ক এবং সঠিক মাপের জুতো পরুন।
- দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকলে মাঝে মাঝে বিরতি নিন এবং পায়ের ব্যায়াম করুন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
- যদি পায়ের রগে টান বার বার লাগে।
- যদি ব্যথা খুব তীব্র হয় এবং ঘরোয়া উপায়ে না কমে।
- যদি পায়ের পেশি ফুলে যায় বা লাল হয়ে যায়।
- যদি অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়।
মনে রাখবেন, পায়ের রগে টান লাগা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, ঘন ঘন হলে বা তীব্র ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন