বন্ধ্যাত্বের জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাবকে সরাসরি দায়ী করা যায় না। তবে কিছু ভিটামিনের অভাব নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং তাদের অভাবের প্রভাব আলোচনা করা হলো:
ভিটামিন ই: ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এটি প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুক্রাণুর গুণমান উন্নত করতে এবং ডিম্বাণুকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় ভিটামিন ই এর অভাব এবং বন্ধ্যাত্বের মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতে ভিটামিন ডি এর অভাব এবং নারী ও পুরুষের উর্বরতা কমে যাওয়ার মধ্যে একটি সম্পর্ক দেখা গেছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে, ভিটামিন ডি ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে, এটি শুক্রাণুর গুণমান এবং সংখ্যায় ভূমিকা রাখতে পারে।
ভিটামিন বি১২: ভিটামিন বি১২ লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যকারিতার জন্য জরুরি। এর অভাব পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়া এবং মহিলাদের মধ্যে ডিম্বস্ফোটনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু গবেষণায় ভিটামিন বি১২ এর অভাব এবং বন্ধ্যাত্বের মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
ফলিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৯): ফলিক অ্যাসিড গর্ভধারণের পূর্বে এবং গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের সঠিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাব মহিলাদের ডিম্বস্ফোটনের সমস্যা এবং পুরুষদের শুক্রাণুর গুণমান কমে যাওয়ার সাথে যুক্ত হতে পারে।
ভিটামিন সি: ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এটি শুক্রাণুকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় ভিটামিন সি এর অভাব এবং পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
যদিও এই ভিটামিনগুলোর অভাব বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, তবে বন্ধ্যাত্বের আরও অনেক কারণ রয়েছে, যেমন - হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, জিনগত সমস্যা, জীবনযাত্রার ধরন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থা।
যদি আপনার বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থাকে, তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার আপনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এবং প্রয়োজনে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের মাত্রা নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা করাতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন। নিজে থেকে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন