টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য কিছু ব্যায়াম নিচে উল্লেখ করা হলো:
ওয়েট ট্রেনিং (Weight Training):
-
কম্পাউন্ড ব্যায়াম (Compound Exercises): এই ব্যায়ামগুলো একসাথে শরীরের একাধিক বড় পেশীgruপে কাজ করে এবং টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে বেশি ভূমিকা রাখে। যেমন:
- স্কোয়াট (Squats): পায়ের পেশীর জন্য খুব ভালো ব্যায়াম এবং টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সাহায্য করে।
- ডেডলিফট (Deadlifts): এটি একটি ফুল-বডি ব্যায়াম যা শরীরের প্রায় সকল বড় পেশীকে কাজে লাগায় এবং টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে খুবই কার্যকর।
- বেঞ্চ প্রেস (Bench Press): বুকের পেশীর ব্যায়াম হলেও এটি টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সাহায্য করে।
- ওভারহেড প্রেস (Overhead Press): কাঁধ এবং হাতের পেশীর ব্যায়াম যা টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে সাহায্য করে।
- পুল-আপ/চিন-আপ (Pull-ups/Chin-ups): পিঠ এবং হাতের পেশীর ব্যায়াম যা টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সাহায্য করে।
- লাঞ্জেস (Lunges): পায়ের পেশীর ব্যায়াম যা টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সাহায্য করে।
-
ভারী ওজন ব্যবহার করে কম সংখ্যক বার পুনরাবৃত্তি (Repetitions) করার চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, ভারী ওজন এবং কম পুনরাবৃত্তির ব্যায়াম টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে বেশি কার্যকর।
-
ব্যায়ামের সেটের মধ্যে পর্যাপ্ত বিশ্রাম (প্রায় ২ মিনিট) নেওয়া উচিত, যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT):
- HIIT হলো স্বল্প সময়ে তীব্র ব্যায়াম এবং বিশ্রাম নেওয়ার একটি পদ্ধতি। এটি ফ্যাট বার্ন করতে এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
- যেমন: স্প্রিন্ট (sprinting) - ৩০ সেকেন্ডের জন্য তীব্র গতিতে দৌড়ে বিশ্রাম নেওয়া, তারপর আবার দৌড়ানো। এই প্রক্রিয়া কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করা।
বডিওয়েট ব্যায়াম (Bodyweight Exercises):
- কিছু বডিওয়েট ব্যায়ামও টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে যখন সেগুলোকে তীব্রভাবে এবং কম বিশ্রাম নিয়ে করা হয়। যেমন:
- পুশ-আপ (Push-ups)
- বডিওয়েট স্কোয়াট (Bodyweight Squats)
- পুল-আপ (Pull-ups)
- ডিপস (Dips)
অন্যান্য বিষয় যা টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সাহায্য করে:
- পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের অভাব টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।
- স্বাস্থ্যকর খাবার: প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (যেমন অ্যাভোকাডো, বাদাম, জলপাই তেল) হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি এর অভাব টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমাতে পারে। তাই পর্যাপ্ত সূর্যের আলোয় থাকা বা ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে (চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী)।
- স্ট্রেস কমানো: অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। যোগা, মেডিটেশন বা শখের কাজে সময় দেওয়ার মাধ্যমে স্ট্রেস কমানো যায়।
মনে রাখবেন, ব্যায়ামের পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার স্বাস্থ্য অবস্থার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন