সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকবে তা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে এবং একেকজনের ক্ষেত্রে এটি ভিন্ন হতে পারে। তবে, একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া যেতে পারে:
প্রথম কয়েক সপ্তাহ (২-৬ সপ্তাহ):
- প্রথম ২-৩ দিন: সিজারের পর প্রথম কয়েক দিন ব্যথা সাধারণত সবচেয়ে তীব্র থাকে। এই সময় ব্যথানাশক ঔষধের প্রয়োজন হয়। হাঁটাচলা, কাশি বা নড়াচড়া করলে ব্যথা আরও বাড়তে পারে।
- পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ: ধীরে ধীরে ব্যথা কমতে শুরু করে। তবে, ক্ষতস্থানের আশেপাশে অস্বস্তি, টান লাগা বা হালকা ব্যথা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। ভারী জিনিস তোলা বা অতিরিক্ত শারীরিক কার্যকলাপ করলে ব্যথা পুনরায় বাড়তে পারে।
কয়েক মাস পর্যন্ত:
- ২-৬ মাস: অনেকের ক্ষেত্রে ক্ষতস্থানের ভেতরের ব্যথা বা অসাড়তা কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। স্নায়ু পুনরুদ্ধারের কারণে এই সময়ে হালকা চিনচিনে ব্যথা বা অস্বস্তিও অনুভূত হতে পারে।
- ৬ মাসের পর: বেশিরভাগ মহিলার ক্ষেত্রেই সিজারের পরের ব্যথা ৬ মাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে হালকা অস্বস্তি বা ক্ষতস্থানের সংবেদনশীলতা আরও বেশি সময় ধরে থাকতে পারে।
ব্যথা কতদিন থাকবে তা নির্ভর করে:
- ব্যক্তিগত সহনশীলতা: ব্যথার অনুভূতি একেকজনের ভিন্ন হতে পারে।
- সিজারের জটিলতা: যদি সিজারের সময় কোনো জটিলতা থাকে, তবে ব্যথা বেশি দিন স্থায়ী হতে পারে।
- ইনফেকশন: ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হলে ব্যথা বাড়তে পারে এবং নিরাময়ে বেশি সময় লাগতে পারে।
- শারীরিক কার্যকলাপ: প্রসব পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত শারীরিক কার্যকলাপ করলে ব্যথা পুনরায় বাড়তে পারে বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
- ব্যথানাশক ঔষধের ব্যবহার: সঠিক সময়ে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ঔষধ ব্যবহার করলে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
করণীয়:
- ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন: ব্যথানাশক ঔষধ কখন এবং কতদিন খেতে হবে তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মেনে চলুন।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: শরীরকে সেরে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন।
- হালকা হাঁটাচলা করুন: ধীরে ধীরে হাঁটাচলা রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে এবং দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত exertion এড়িয়ে চলুন।
- ভারী জিনিস তোলা এড়িয়ে চলুন: অন্তত প্রথম কয়েক সপ্তাহ ভারী জিনিস তোলা উচিত নয়।
- সঠিকভাবে বসুন ও উঠুন: পেটের উপর চাপ না পড়ে সাবধানে বসুন ও উঠুন।
- ক্ষতের যত্ন নিন: ক্ষত পরিষ্কার রাখুন এবং ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী যত্ন নিন।
- ধৈর্য ধরুন: শরীরকে সম্পূর্ণরূপে সেরে উঠতে সময় দিন।
যদি আপনার ব্যথা সময়ের সাথে সাথে না কমে বা হঠাৎ করে বেড়ে যায়, অথবা যদি অন্য কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ (যেমন জ্বর, পুঁজ, লালচে ভাব) দেখা দেয়, তবে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন