গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হয়

 


গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে ইনফেকশন (ইউটিআই) হলে শুধুমাত্র খাবারের মাধ্যমে এর সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। এর জন্য সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক medication প্রয়োজন হয় যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ।

তবে, কিছু খাবার ও পানীয় গ্রহণ করা UTI-এর লক্ষণ কমাতে, সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক হতে পারে:

যা খেতে ও পান করতে পারেন:

  • প্রচুর পরিমাণে জল: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত জল পান করলে প্রস্রাবের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া শরীর থেকে বের হয়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস জল পান করা উচিত।
  • ক্র্যানবেরি জুস (চিনিমুক্ত): কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্র্যানবেরিতে থাকা উপাদান মূত্রাশয়ের দেয়ালে ব্যাকটেরিয়া আটকে যাওয়া প্রতিরোধ করতে পারে। তবে, গর্ভাবস্থায় এর কার্যকারিতা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। চিনিযুক্ত ক্র্যানবেরি জুস এড়িয়ে চলুন। যাদের কিডনিতে পাথর বা ডায়াবেটিস আছে, তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং প্রস্রাবের অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দিতে পারে। লেবু, কমলা, আমলকি, পেয়ারা, স্ট্রবেরি এবং অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খান।
  • প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার: দই (মিষ্টি ছাড়া), কেফির এবং অন্যান্য প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি ইউরিনারি ট্র্যাক্টের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী হতে পারে।
  • আঁশযুক্ত খাবার: শস্য, ফল এবং সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এটি হজমক্ষমতাকে সঠিক রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে, যা মূত্রাশয়ের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • রসুন: রসুনে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি UTI-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। তবে এটি পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।
  • হলুদ: হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

যা এড়িয়ে চলা উচিত:

  • ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: কফি, চা এবং অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় মূত্রাশয়কে উত্তেজিত করতে পারে এবং UTI-এর লক্ষণ আরও খারাপ করতে পারে।
  • অ্যালকোহল: অ্যালকোহল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে এবং ডিহাইড্রেশন ঘটাতে পারে, যা UTI-এর জন্য ক্ষতিকর।
  • অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়: চিনি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
  • মসলাদার খাবার: কিছু মসলাদার খাবার মূত্রাশয়কে আরও সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।
  • কৃত্রিম মিষ্টি: কিছু কৃত্রিম মিষ্টি মূত্রাশয়ের সমস্যা বাড়াতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:

  • গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ঘরোয়া উপায় অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প নয়।
  • ডাক্তার আপনার অবস্থার জন্য নিরাপদ অ্যান্টিবায়োটিক prescribe করবেন। অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পূর্ণ করা জরুরি।
  • প্রচুর পরিমাণে জল পান করা UTI চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিরোধেও সহায়ক।
  • ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন এবং নিয়মিত প্রস্রাব করুন।

মনে রাখবেন, গর্ভাবস্থায় UTI একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে যা মায়ের এবং শিশুর উভয়ের জন্যই ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই, দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী চলা উচিত।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন