খুবই সুন্দর একটি অনুরোধ! স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে একটি ছোট গল্প নিচে দেওয়া হলো।
স্বামী-স্ত্রীর গল্প
অফিস থেকে ফিরে সোফায় গা এলিয়ে দিলেন অনির্বাণ। দিনের ক্লান্তিটা যেন কাঁধের ওপর চেপে বসে আছে। বাইরের বারান্দা থেকে ভেসে আসছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ। চোখ বন্ধ করলেন তিনি।
"চা খাবে?"
স্নিগ্ধ, পরিচিত কণ্ঠস্বর। চোখ না খুলেই অনির্বাণ বুঝলেন, মধুরিমা। তাদের দীর্ঘ দশ বছরের বিবাহিত জীবন, কিন্তু এখনও মধুরিমার প্রতিটি ডাক যেন প্রথম দিনের মতোই সতেজ।
"হ্যাঁ, দাও," আলস্য জড়ানো উত্তর দিলেন তিনি।
মধুরিমা একটা হালকা নীল শাড়ি পরেছেন। হাতে চায়ের ট্রে, সঙ্গে গরম মুচমুচে আলুর চপ। অনির্বাণকে চুপ করে বসে থাকতে দেখে মধুরিমার কপালে ভাঁজ পড়ল।
"কী হয়েছে আজ? এত চুপচাপ কেন?"
অনির্বাণ হাসার চেষ্টা করলেন, কিন্তু হাসিতে ক্লান্তি স্পষ্ট। "তেমন কিছু না। অফিসের ঝামেলা। প্রজেক্টটা আটকে আছে, টার্গেট পূরণ হচ্ছে না... সব মিলিয়ে একটা চাপ।"
মধুরিমা চায়ের কাপটা তার হাতে তুলে দিলেন। "চায়ের কাপের মতো গরম জলে মাথা ডুবিয়ে আছো কেন? একটা ছোট ছুটি নাও না কেন? কদিন ধরেই তো দেখছি, রাতেও ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকো।"
অনির্বাণ দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। "এখন ছুটি নেওয়া সম্ভব না, মধু। এই সময়টাতেই তো সবচেয়ে বেশি কাজ।"
মধুরিমা চুপ করে অনির্বাণের পাশে বসলেন। ঘরের ভেতর শুধু বৃষ্টির আর তাদের নিঃশ্বাসের শব্দ। কয়েক মিনিট পর মধুরিমা তার হাতটা ধরলেন। অনির্বাণ তাকালেন।
"অফিসের চাপ তো থাকবেই, অনির্বাণ। কিন্তু তুমি কি ভুলে যাচ্ছো, আমরা বিয়ে করেছিলাম শুধু অফিস করার জন্য নয়? তুমি কি ভুলে যাচ্ছো, তোমার একটা সাত বছরের মেয়ে আছে, যে প্রতি সন্ধ্যায় তোমার জন্য অপেক্ষা করে? একটা স্ত্রী আছে, যে তোমার মুখের হাসিটা দেখতে ভালোবাসে?"
অনির্বাণের ভেতরের জমাট বাঁধা বরফ যেন গলতে শুরু করল। তিনি সত্যি ভুলে যাচ্ছিলেন। শুধু 'সফল' হওয়ার দৌড়ে তিনি তার সবচেয়ে আপন মানুষগুলোকে অবহেলা করছিলেন।
মধুরিমা আলতো করে তার কাঁধে মাথা রাখলেন। "টাকা রোজগার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু জীবনের চেয়ে বেশি নয়। আমাদের জন্য তোমার একটু সময়, দুটো কথা—এগুলোই তো আসল সঞ্চয়। এসো, আজ নাহয় আমরা অফিস-কথা বন্ধ রাখি। চলো, রিমঝিমকে ডাকি। তিনজন মিলে বারান্দায় বসে বৃষ্টি দেখি। হাতে একটু চা আর আলুর চপ, আর আমাদের পুরনো দিনের গল্প।"
অনির্বাণ চায়ের কাপটা নামিয়ে মধুরিমার দিকে ঘুরলেন। তার ঠোঁটে এবার একটা সত্যিকারের হাসি ফুটল। তিনি মধুরিমার হাতটা চেপে ধরলেন।
"ঠিক বলেছো, মধু। আজ আর কোনো কাজ নয়। শুধুই পরিবার।"
অনির্বাণ উঠে গিয়ে রিমঝিমকে ডাকলেন। ছোট মেয়েটি ছুটে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরল। তারা তিনজন বারান্দায় বসলেন। বাইরে তখন মেঘ কেটে গিয়ে শেষ বিকেলের নরম কমলা-হলুদ রং ছড়িয়ে পড়ছে। সেই আলোয় অনির্বাণ উপলব্ধি করলেন, জীবনের সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচেয়ে মূল্যবান 'প্রজেক্ট' হলো তার এই ছোট পরিবার—যেখানে ক্লান্তিও মধুরিমার ছোঁয়ায় শান্ত হয়, আর হতাশা মিলিয়ে যায় রিমঝিমের হাসিতে।
---
গল্পটি কেমন লাগলো? আপনি যদি চান, তাহলে এই ধরনের অন্য কোনো সম্পর্কের উপরও আমি গল্প লিখতে পারি।
স্বামী-স্ত্রীর গল্প বিভিন্ন ধরনের হতে পারে—যেমন **রোমান্টিক**, **দুষ্টু-মিষ্টি খুনসুটির**, **পারিবারিক বন্ধনের**, বা **জীবন সংগ্রামের**।
আপনি কি বিশেষ কোনো **ধরনের গল্প** জানতে চাইছেন, নাকি আমি আপনাকে **একটি গল্প** শোনাব?
যেমন, আপনি হয়তো জানতে চাইতে পারেন:
* একটি **মিষ্টি ভালোবাসার গল্প**?
* বা একটি **শিক্ষামূলক পারিবারিক গল্প**?
আপনি কী ধরনের গল্প শুনতে চান, আমাকে বলুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন