ঘন ঘন স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়গুলো মূলত আগের উত্তরের মতোই, তবে এখানে কিছু বিষয় আরও জোর দেওয়া হলো এবং কিছু অতিরিক্ত পরামর্শ যোগ করা হলো:
জীবনযাত্রায় কঠোর পরিবর্তন:
- ঘুমের রুটিন কঠোরভাবে মেনে চলা: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা (সপ্তাহান্তেও)। ঘুমের অভাব বা অনিয়মিত ঘুমের কারণে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
- ঘুমের পরিবেশ উন্নত করা: শোবার ঘর শান্ত, অন্ধকার এবং আরামদায়ক হওয়া উচিত। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা যেন না থাকে। ভালো মানের তোষক এবং বালিশ ব্যবহার করুন।
- খাবারের সময়সূচী নিয়ন্ত্রণ: রাতের খাবার ঘুমানোর অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা আগে হালকাভাবে গ্রহণ করুন। মশলাদার এবং তৈলাক্ত খাবার রাতে এড়িয়ে চলুন।
- ব্যায়ামের তীব্রতা ও সময় নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত ব্যায়াম জরুরি, তবে ঘুমানোর অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে কঠোর ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন। দিনের বেলায় হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করুন।
- তরল গ্রহণের সময় নিয়ন্ত্রণ: দিনের বেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন, তবে রাতে ঘুমানোর আগে তরল গ্রহণ কমিয়ে দিন যাতে রাতে প্রস্রাবের জন্য ঘুম না ভাঙে।
মানসিক ও আবেগিক নিয়ন্ত্রণ:
- মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার কৌশল: নিয়মিত যোগা, মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা অন্য কোনো শিথিলকরণ কৌশল অনুশীলন করুন। অতিরিক্ত মানসিক চাপ হরমোনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
- যৌন উদ্দীপক বিষয় পরিহার: সিনেমা, ভিডিও, বই বা অন্য কোনো প্রকার যৌন উদ্দীপক বিষয় দেখা বা পড়া থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকুন, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে।
- মনোসংযোগ পরিবর্তন: যখনই যৌন চিন্তা বা উত্তেজনা অনুভব করবেন, সাথে সাথে আপনার মনকে অন্য কোনো কাজে বা চিন্তায় diversion করুন। বই পড়া, গান শোনা বা অন্য কোনো শখের দিকে মনোযোগ দিন।
- ইতিবাচক চিন্তাভাবনা: নেতিবাচক চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা পরিহার করে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করার চেষ্টা করুন।
আচরণগত পরিবর্তন:
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে মূত্রাশয় খালি করা: ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করে মূত্রাশয় খালি রাখুন।
- পেটের উপর চাপ এড়িয়ে চলা: চিৎ হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং পেটের উপর চাপ পড়ে এমন ভঙ্গি পরিহার করুন।
- আরামদায়ক পোশাক: রাতে শুধুমাত্র আরামদায়ক এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করুন।
চিকিৎসা ও পেশাদার পরামর্শ:
- ইউরোলজিস্টের পরামর্শ: যদি ঘন ঘন স্বপ্নদোষ আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করে এবং আপনি কোনো উন্নতি না দেখেন, তবে একজন ইউরোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। তিনি শারীরিক কোনো কারণ আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে পারেন।
- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্টের পরামর্শ: মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা অন্য কোনো মানসিক কারণে ঘন ঘন স্বপ্নদোষ হতে পারে। এক্ষেত্রে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া সহায়ক হতে পারে। তারা আপনাকে আচরণগত থেরাপি বা অন্য কোনো মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার মাধ্যমে সাহায্য করতে পারেন।
- কোনো প্রকার কুসংস্কার বা ভুল ধারণা পরিহার: স্বপ্নদোষ নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। এগুলোর অনুসরণ না করে সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের উপর নির্ভর করুন।
ধৈর্য্য ধারণ:
ঘন ঘন স্বপ্নদোষ নিয়ন্ত্রণ করতে সময় লাগতে পারে। ধৈর্য্য ধরুন এবং নিয়মিতভাবে উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলো মেনে চলুন। হতাশ না হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান।
মনে রাখবেন, যদি এই সমস্যাটি আপনার জীবনকে খুব বেশি প্রভাবিত করে, তবে পেশাদার সাহায্য চাওয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন