পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয়

 

পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে কিছু খাবার সহায়ক হতে পারে কারণ তাদের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বা ব্যথানাশক বৈশিষ্ট্য থাকে, অথবা তারা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে যা মাসিকের সময় আরাম দিতে পারে। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:

ফল ও সবজি:

  • সবুজ পাতাযুক্ত সবজি (যেমন পালং শাক, kale): এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে যা মাসিকের সময় শরীরকে শক্তি যোগায় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • ব্রকলি: ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে।
  • আনারস: এতে ব্রোমেলিন নামক একটি এনজাইম থাকে যার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
  • পেঁপে: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং হজমক্ষমতাকে উন্নত করে, যা মাসিকের অস্বস্তি কমাতে সহায়ক।
  • কলা: পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ, যা পেটের ফোলাভাব এবং পেশির খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে।
  • লেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফল: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে।

শস্য ও বীজ:

  • কুইনোয়া: ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং প্রোটিনের ভালো উৎস।
  • বাদাম ও বীজ (যেমন কাঠবাদাম, কুমড়োর বীজ, তিলের বীজ, ফ্ল্যাক্সসিড): ম্যাগনেসিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ কমাতে এবং পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে। ফ্ল্যাক্সসিড হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক।
  • ওটস: ফাইবার সমৃদ্ধ এবং ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে, যা মাসিকের সময় ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।

প্রোটিন:

  • মাছ (যেমন স্যামন, টুনা): ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস, যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
  • ডিম: প্রোটিন এবং ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ।
  • চিকেন (চামড়া ছাড়া): সহজে হজমযোগ্য প্রোটিনের উৎস।

অন্যান্য:

  • আদা: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং পেটের অস্বস্তি, বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে। আদা চা খুবই উপকারী।
  • ডার্ক চকোলেট (কমপক্ষে ৭০% কোকো): ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ এবং মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। তবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • হলুদ: শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত। হলুদ দুধ বা হলুদ চা পান করা যেতে পারে।
  • পানি: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং পেটের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • হার্বাল চা (যেমন ক্যামোমিল, মেন্থ, আদা): পেশি শিথিল করতে এবং আরাম দিতে সাহায্য করে।

যা এড়িয়ে যাওয়া উচিত:

  • প্রক্রিয়াজাত খাবার: এগুলোতে অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা প্রদাহ বাড়াতে পারে।
  • অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার: শরীরে পানি ধরে রাখার প্রবণতা বাড়াতে পারে এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে।
  • ক্যাফেইন (চা, কফি, কোলা): কিছু নারীর ক্ষেত্রে এটি ব্যথা বাড়াতে পারে।
  • অ্যালকোহল: শরীরে ডিহাইড্রেশন ঘটাতে পারে এবং ব্যথা বাড়াতে পারে।
  • ফ্যাটযুক্ত খাবার: হজম হতে বেশি সময় লাগে এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
  • দুগ্ধজাত খাবার (অতিরিক্ত পরিমাণে): কিছু নারীর ক্ষেত্রে এটি প্রদাহ বাড়াতে পারে।

এই খাবারগুলো আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে মনে রাখবেন, খাদ্যাভ্যাস একটি সামগ্রিক বিষয় এবং শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু খাবারের উপর নির্ভর করে তীব্র ব্যথা কমানো নাও যেতে পারে। সুস্থ জীবনযাপন এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াও জরুরি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন