গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড কমানোর উপায়,মোটা থাইরয়েড কমানোর উপায়

 

ওষুধ ছাড়া গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড কমানোর কোনো সরাসরি উপায় নেই এবং এটি মা ও গর্ভের সন্তানের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং তাদের দেওয়া চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

তবে, কিছু বিষয় আলোচনা করা যেতে পারে যা থাইরয়েডের ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই ডাক্তারের পরামর্শের বিকল্প নয়:

খাদ্য পরিবর্তন (ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী):

  • আয়োডিন নিয়ন্ত্রণ: গর্ভাবস্থায় আয়োডিনের সঠিক মাত্রা গ্রহণ করা জরুরি, কারণ এটি মায়ের এবং শিশুর থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য প্রয়োজন। তবে, Graves' disease-এর কারণে হাইপারথাইরয়েডিজম হলে, অতিরিক্ত আয়োডিন গ্রহণ ক্ষতিকর হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়োডিনের গ্রহণ মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।
  • ক্রুসিফেরাস সবজি: বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদি সবজি থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে সামান্য বাধা দিতে পারে। তবে, গর্ভাবস্থায় এগুলো পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করা উচিত নয়।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার: ফল, সবজি এবং ভেষজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

জীবনধারা পরিবর্তন:

  • স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ থাইরয়েডের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। যোগা, মেডিটেশন বা অন্যান্য relaxation কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
  • পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অপরিকল্পিত বা untreated হাইপারথাইরয়েডিজম মা ও সন্তানের উভয়ের জন্যই জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন গর্ভপাত, সময়ের আগে প্রসব, বাচ্চার কম ওজন, মায়ের হার্ট ফেইলিউর ইত্যাদি।
  • গর্ভাবস্থায় হাইপারথাইরয়েডিজমের প্রধান চিকিৎসা হলো অ্যান্টি-থাইরয়েড ওষুধ (যেমন Propylthiouracil - PTU এবং Methimazole)। ডাক্তার সাধারণত প্রথম তিনমাসের জন্য PTU এবং তারপর Methimazole ব্যবহারের পরামর্শ দেন, কারণ Methimazole প্রথম তিনমাসে সামান্য জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে, এই ওষুধগুলোও ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করা জরুরি।
  • তেজস্ক্রিয় আয়োডিন থেরাপি গর্ভাবস্থায় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, কারণ এটি গর্ভের শিশুর থাইরয়েড গ্রন্থিকে ধ্বংস করতে পারে।
  • বিরল ক্ষেত্রে, ওষুধে কাজ না হলে বা অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে থাইরয়েডেক্টমি (থাইরয়েড গ্রন্থি অপসারণের সার্জারি) করা যেতে পারে, তবে এটি সাধারণত শেষ অবলম্বন হিসেবে বিবেচিত হয়।

করণীয়:

  • যদি আপনি গর্ভবতী হন এবং থাইরয়েডের সমস্যা থাকে, অথবা গর্ভবতী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন এবং থাইরয়েডের সমস্যা আছে বলে জানেন, তাহলে অবিলম্বে একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্টের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তাকে আপনার গর্ভাবস্থার কথা জানান।
  • ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি কঠোরভাবে মেনে চলুন।
  • নিয়মিত থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা করান এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা সমন্বয় করুন।
  • নিজের ইচ্ছামতো কোনো ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করবেন না বা ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করবেন না।

গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের সঠিক চিকিৎসা মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। তাই, কোনো প্রকার ঘরোয়া পদ্ধতির উপর নির্ভর না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং তাদের দেওয়া চিকিৎসা অনুসরণ করুন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন