পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি কি,সংখ্যা পদ্ধতি বেজ কি

 পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি (Positional Number System) হলো এমন একটি সংখ্যা পদ্ধতি যেখানে প্রতিটি অঙ্কের মান তার অবস্থানের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, একটি সংখ্যায় একই অঙ্ক বিভিন্ন স্থানে বসলে তার মান ভিন্ন হয়। এই পদ্ধতিকে স্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি বা Weighted Number System-ও বলা হয় কারণ প্রতিটি অবস্থানের একটি নির্দিষ্ট "ওজন" (weight) থাকে।

পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্য:

• ভিত্তি (Base বা Radix): প্রতিটি পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতির একটি ভিত্তি থাকে। ভিত্তি হলো সেই সংখ্যা পদ্ধতির মোট কয়টি স্বতন্ত্র প্রতীক (অঙ্ক) ব্যবহার করে সংখ্যা গঠন করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ১০ (০-৯ অঙ্ক), বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ২ (০ ও ১ অঙ্ক), অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ৮ (০-৭ অঙ্ক), এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ১৬ (০-৯ এবং A-F অঙ্ক)।
• অঙ্কের মান: প্রতিটি অঙ্কের নিজস্ব একটি মান থাকে।
• অঙ্কের অবস্থান: সংখ্যার মধ্যে অঙ্কের অবস্থান তার মান নির্ধারণ করে। বাম দিকে সরার সাথে সাথে অবস্থানের মান ভিত্তির ঘাত আকারে বৃদ্ধি পায়।
• রেডিক্স পয়েন্ট (Radix Point): পূর্ণ সংখ্যা এবং ভগ্নাংশ অংশকে আলাদা করার জন্য একটি প্রতীক (যেমন দশমিক বিন্দু) ব্যবহার করা হয়।

একটি পজিশনাল সংখ্যার মান নির্ণয়:

একটি পজিশনাল সংখ্যাকে তার ভিত্তি এবং অবস্থানের ওজন ব্যবহার করে দশমিক মানে রূপান্তর করা যায়। যদি কোনো সংখ্যা (d_n d_{n-1} \ldots d_1 d_0 . d_{-1} d_{-2} \ldots d_{-m}) এবং তার ভিত্তি (b) হয়, তবে তার দশমিক মান হবে:

$$(d_n\times b^n)+(d_{n-1}\times b^{n-1})+\dots +(d_1\times b^1)+(d_0\times b^0)+(d_{-1}\times b^{-1})+(d_{-2}\times b^{-2})+\dots +(d_{-m}\times b^{-m})$$

উদাহরণ:

• দশমিক সংখ্যা: (123.45_{10})

  (1×102)+(2×101)+(3×100)+(4×10−1)+(5×10−2)=100+20+3+0.4+0.05=123.45

• বাইনারি সংখ্যা: (101.1_2)

  (1×22)+(0×21)+(1×20)+(1×2−1)=4+0+1+0.5=5.510​

গুরুত্বপূর্ণ পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি:

• দশমিক (Decimal - Base 10): দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত সংখ্যা পদ্ধতি।
• বাইনারি (Binary - Base 2): কম্পিউটার এবং ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সে ব্যবহৃত মৌলিক সংখ্যা পদ্ধতি।
• অক্টাল (Octal - Base 8): কম্পিউটারে বাইনারি সংখ্যার সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
• হেক্সাডেসিমেল (Hexadecimal - Base 16): কম্পিউটারে মেমোরি অ্যাড্রেস এবং ডেটা উপস্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হয়।

পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি আধুনিক কম্পিউটিং এবং গণিতের একটি অপরিহার্য অংশ। এর মাধ্যমেই সংখ্যা এবং ডেটা কার্যকরভাবে উপস্থাপন ও প্রক্রিয়া করা সম্ভব হয়।