হার্ট অ্যাটাকের পর রোগীর খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সঠিক খাদ্যাভ্যাস হৃদপিণ্ডের পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যতের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সাধারণভাবে, হার্ট অ্যাটাক হওয়া রোগীর জন্য নিম্নলিখিত খাবারগুলো উপকারী:
যা খাওয়া উচিত:
- ফল ও সবজি: প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল ও সবজি যেমন - আপেল, কমলা, কলা, বেরি, পালং শাক, ব্রকলি, গাজর ইত্যাদি। এগুলোতে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে যা হৃদরোগের জন্য উপকারী।
- গোটা শস্য: লাল চাল, লাল আটা, ওটস, বার্লি, কুইনোয়া এর মতো খাবার ফাইবার সমৃদ্ধ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- চর্বিহীন প্রোটিন: মাছ (বিশেষত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ যেমন স্যামন, টুনা), মুরগির চামড়া ছাড়া মাংস, ডিমের সাদা অংশ, শিম এবং মটরশুঁটি প্রোটিনের ভালো উৎস এবং এগুলো চর্বি কম থাকে।
- স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো, বাদাম (যেমন কাঠবাদাম, আখরোট), এবং বীজ (যেমন তিসি বীজ, চিয়া বীজ) স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সরবরাহ করে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করে।
- কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার: লো ফ্যাট দুধ, টক দই হৃদরোগীদের জন্য ভালো।
যা এড়িয়ে যাওয়া উচিত:
- স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট: লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজা খাবার, মাখন, পনির এবং অন্যান্য উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
- উচ্চ কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার: ডিমের কুসুম, কলিজা, মগজ এবং চিংড়ি মাছ কম পরিমাণে খেতে হবে।
- অতিরিক্ত লবণ: লবণাক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অতিরিক্ত লবণ যোগ করা খাবার বর্জন করা উচিত কারণ এটি উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত চিনি: মিষ্টি পানীয়, মিষ্টি খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে যোগ করা চিনি এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
- পরিশোধিত শস্য: সাদা চাল, সাদা আটা এবং ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার কম খাওয়া উচিত।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- ছোট এবং ঘন ঘন খাবার গ্রহণ: একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প পরিমাণে খাবার কয়েকবার খাওয়া ভালো।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা: ডিহাইড্রেশন এড়িয়ে চলতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা উচিত।
- ডাক্তার ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ: রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে একজন ডাক্তার বা পুষ্টিবিদ সঠিক খাদ্য তালিকা তৈরি করে দিতে পারেন। তাই তাদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা উচিত।
মনে রাখবেন, হার্ট অ্যাটাকের পর খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস তৈরি করতে হবে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার ত্যাগ করতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন