সিজারের পর শোয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চললে দ্রুত সুস্থ হওয়া এবং আরাম পাওয়া যায়। যেহেতু সিজার একটি বড় ধরনের অস্ত্রোপচার, তাই পেটের মাংসপেশি এবং অন্যান্য টিস্যু সেরে ওঠার জন্য সঠিক বিশ্রাম এবং অবস্থানের প্রয়োজন। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলী আলোচনা করা হলো:
প্রথম কয়েক দিন:
- পিঠের দিকে সামান্য উঁচু হয়ে শোয়া: একেবারে flat না শুয়ে, কোমর থেকে মাথার দিকটা বালিশ দিয়ে সামান্য উঁচু করে শোওয়া ভালো। এতে পেটের ওপর চাপ কম লাগে এবং উঠতে-বসতে সুবিধা হয়। আপনি চাইলে রি-ক্লাইনার চেয়ার ব্যবহার করতে পারেন অথবা বিছানায় কয়েকটি বালিশ ব্যবহার করে হেলান দিয়ে শুতে পারেন।
- দুই হাঁটুর নিচে বালিশ: পিঠের দিকে শোয়ার সময় দুই হাঁটুর নিচে একটি বালিশ রাখলে পেটের মাংসপেশির টান কমে এবং আরাম পাওয়া যায়।
- পাশ ফিরে শোয়া: পাশ ফিরে শোয়াও আরামদায়ক হতে পারে, বিশেষ করে যখন আপনি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে চান। এক্ষেত্রে, পেটের দিকে সরাসরি চাপ এড়িয়ে চলুন। আপনি আপনার পিঠের দিকে এবং পেটের দিকে বালিশ ব্যবহার করে সাপোর্ট নিতে পারেন। বাম পাশ ফিরে শোয়া রক্ত সঞ্চালনের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়।
ঘুম থেকে ওঠা ও বিছানায় যাওয়া:
- হঠাৎ করে উঠা বা বসা এড়িয়ে চলুন: সিজারের পর পেটের মাংসপেশি দুর্বল থাকে। তাই সরাসরি কোমর ভাঁজ করে ওঠার চেষ্টা করবেন না।
- পাশ ফিরে উঠুন: ঘুম থেকে ওঠার সময় প্রথমে এক পাশে কাত হোন। এরপর হাত এবং কনুইয়ের সাহায্যে ধীরে ধীরে বসুন। পেটের উপর চাপ কম দেওয়ার চেষ্টা করুন।
- বিছানায় যাওয়ার সময়: একইভাবে, প্রথমে এক পাশে কাত হোন এবং তারপর ধীরে ধীরে পিঠের দিকে ঘুরুন।
সাধারণ নিয়মাবলী:
- ব্যথার ওষুধ: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ নিয়মিত খান। এতে আরাম পাবেন এবং ঘুমাতে সুবিধা হবে।
- আরামদায়ক পোশাক: ঢিলেঢালা এবং নরম পোশাক পরিধান করুন যা আপনার পেটের কাটা অংশে ঘষা লাগবে না।
- পরিষ্কার পরিছন্ন থাকা: নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কাটা অংশের যত্ন নিন এবং পরিষ্কার পরিছন্ন থাকুন।
- হাঁটাচলা: ডাক্তার অনুমতি দিলে অল্প অল্প করে হাঁটাচলা শুরু করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে এবং দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে। তবে বেশি ঘোরাঘুরি বা ভারী কাজ করা উচিত না।
- কাশি বা হাঁচির সময়: কাশি বা হাঁচির সময় পেটের কাটা অংশে হাত অথবা বালিশ দিয়ে হালকা চাপ দিন। এতে ব্যথা কম লাগবে।
- достаточно বিশ্রাম: পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম আপনার শরীরকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে। যখন শিশু ঘুমায়, তখন আপনিও বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন।
- ধৈর্য ধরুন: সিজারের পর সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়ার জন্য সময় দিন।
যেসব অবস্থান এড়িয়ে চলা উচিত:
- পেটের উপর ভর দিয়ে শোয়া: এটি কাটা অংশের উপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করে এবং ব্যথা বাড়াতে পারে।
- কোমরের উপর বেশি চাপ দিয়ে বসা: দীর্ঘক্ষণ ঝুঁকে বসা বা এমনভাবে বসা যাতে পেটের উপর চাপ পড়ে তা এড়িয়ে চলুন।
সিজারের পর আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো অস্বাভাবিক ব্যথা বা discomfort হলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন