প্রস্রাবে ইনফেকশন কেন হয়

 

প্রস্রাবে ইনফেকশন (Urinary Tract Infection - UTI) বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এর প্রধান কারণগুলো হলো:

• ব্যাকটেরিয়া (Bacteria): প্রায় ৯০% ক্ষেত্রে ই-কোলাই (E. coli) নামক ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে সংক্রমণের সৃষ্টি করে। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত অন্ত্রে থাকে এবং মলত্যাগের সময় বা অন্য কোনোভাবে মূত্রনালীতে প্রবেশ করতে পারে।

• মূত্রনালীর গঠন:

  • মহিলাদের ক্ষেত্রে: মহিলাদের মূত্রনালী পুরুষদের তুলনায় ছোট এবং মলদ্বারের কাছে অবস্থিত হওয়ায় ব্যাকটেরিয়া সহজে মূত্রাশয়ে প্রবেশ করতে পারে।
  • মূত্রনালীর অস্বাভাবিকতা: জন্মগতভাবে মূত্রনালীর কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

• যৌন কার্যকলাপ: যৌন মিলনের সময় ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করতে পারে, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ কারণ।

• মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে খালি না হওয়া: যদি কোনো কারণে মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে খালি না হয়, তবে অবশিষ্ট প্রস্রাবে ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করার সুযোগ পায়।

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল: দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকলে শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না, ফলে UTI হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

• ক্যাথেটার ব্যবহার: দীর্ঘ সময় ধরে মূত্রনালীতে ক্যাথেটার (প্রস্রাবের জন্য নল) ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

• ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে এবং তাদের প্রস্রাবে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় ব্যাকটেরিয়া সহজে বংশবৃদ্ধি করতে পারে।

• কিডনিতে পাথর: কিডনিতে পাথর বা মূত্রাশয়ে অন্য কোনো বাধা থাকলে প্রস্রাবের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

• প্রৌঢ় বয়স: বয়স্ক মহিলাদের মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবের কারণে মূত্রনালীর টিস্যু পাতলা হয়ে যায় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। বয়স্ক পুরুষদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে মূত্রনালীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করলে UTI হতে পারে।

• অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস:

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করা।
  • প্রস্রাব চেপে রাখা।
  • যৌনাঙ্গ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখা।

• কিছু ঔষধ: কিছু ঔষধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে এবং UTI-এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

সংক্ষেপে, প্রস্রাবে ইনফেকশনের প্রধান কারণ হলো ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে বংশবৃদ্ধি করা। মহিলাদের শারীরিক গঠন, যৌন কার্যকলাপ, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।